কিউইদের নিয়ে রীতিমত ছিনিমিনি খেলল বাংলাদেশ।
মামুলি লক্ষ্যে খেলতে নেমে এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে সাবধানী শুরু করেছিলেন সৌম্য সরকার। ব্যাটিংয়ে নামার পর থেকেই চোখের কিছুটা সমস্যায় ভুগছিলেন সৌম্য সরকার। এরপর একবার চোখে পানি দিতেও দেখা যায় তাকে। ড্রপও দেয়া হয়ে। তবে খুব ভালো অনুভব না করায় মাঠ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। উঠে যাওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ৪ রান।
সৌম্য ফিরে গেলেও সাবলীল ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে জয়ের অনেক কাছে নিয়ে গেছেন বিজয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। যদিও বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি বিজয়। তিনি ৩৩ বলে ৩৭ রান করে উইলিয়াম ও’রর্ককের লাফিয়ে ওঠা বলে বলে উইকেটের পেছনে টম ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন। বাকি সময়টা দেখেশুনে পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন অধিনায়ক শান্ত ও লিটন দাস। আদি অশোকের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ডিপ কাভারে ঠেলে দিয়ে দুই রান নিয়ে ৪২ বলে হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে বাংলাদেশকেও জিতিয়েছেন শান্ত। লিটন অপরাজিত ছিলেন ১ রান করে।
এর আগে এই ম্যাচে টসে জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ওভারের শেষ বলে কিউই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন তানজিম সাকিব।
ডানহাতি এই পেসারের গুড লেন্থের মিডল ও অফ স্টাম্প লাইনে থাকা বলে আলতো খোঁচা দিয়ে ফিরেছেন রাচিন। সহজ ক্যাচ লুফে নিতে ভুল করেননি বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক মুশফিক। নিজের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে ফিরে মেইডেন নেন সাকিব। এই চাপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই নিজের চতুর্থ ওভারে এসে কিউই ব্যাটার হেনরি নিকোলসকে টপ এজ করে আউট করেন সাকিব। নিউজিল্যান্ড দলীয় ২২ রানেই হারায় ২ উইকেট।
এরপর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তৃতীয় উইকেটে টম লাথাম ও উইল ইয়াং কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও। তাদের জুটি থিতু হতে দেননি শরিফুল ইসলাম। ডানহাতি পেসারের গুড লেন্থের ডেলিভারিতে ইন সাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন ২১ রান করা লাথাম। এরপর মার্ক চ্যাপম্যানও ফিরে যান দ্রুত। সিমে পড়ে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন চাপম্যান।
কিন্তু ফুলার লেন্থের বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাকে। চ্যাপম্যান আউট হওয়ার পর টম ব্লান্ডেলকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি সাকিব। ফিরতি স্পেলে বোলিং করতে এসে ৪ রান করা এই ব্যাটারকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ বানিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। অফ স্টাম্পের বাইরে বল পেয়ে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন ব্লান্ডেল। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি। মিরাজের ডাইভিং ক্যাচে ফিরতে হয় তাকে।
এরপর বাকি সময়টা ছিল সৌম্যময়। দারুণ খেলতে থাকা কস ক্লার্কসনকে বোল্ড করে শুরু। সৌম্যর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প চুরমার হয়ে যায় ক্লার্কসনের। ২৩ বলে দুই চারে ১৬ রান করেন ক্লার্কসন। পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে ৪ রান করা মিলনেকে বোল্ড করেছেন সৌম্য।
মুস্তাফিজের ওভারে টানা দুটি চার মেরেছেন আদি অশোক। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে প্রথমবারের মতো টানা দুই বাউন্ডারি দেখা গেছে তার কল্যাণে। লোয়ার অর্ডার এই ব্যাটার সৌম্যর তৃতীয় শিকার হয়েছেন অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে। এরপর কিউইদের শেষ ব্যাটার উইলিয়াম ও’রর্ককে বোল্ড করে নিউজিল্যান্ডকে ৯৮ রানেই গুটিয়ে দেন মুস্তাফিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
নিউজিল্যান্ড- ৯৮/১০ (৩১.৪ ওভার) (ইয়াং ২৬, লাথাম ২১, ক্লার্কসন ১৬; সৌম্য ৩/১৮, শরিফুল ৩/২২, সাকিব ৩/১৪)
বাংলাদেশ- ৯৯/১ (১৫.১ ওভার) (বিজয় ৩৭, সৌম্য ৪, শান্ত ৫১; উইলিয়াম ও’রর্কক ১/৩৩)
0 Comments